Print Sermon

এই ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য হল ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপি এবং ধর্ম্মোপদেশের ভিডিওগুলি বিশ্বব্যাপী পালক ও মিশনারিদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বে, যেখানে ধর্ম্মতত্ত্বমূলক সেমিনারী বা বাইবেল স্কুল থাকলেও খুব কম রয়েছে|

এই সমস্ত ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপি ও ভিডিওগুলি www.sermonsfortheworld.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এখন প্রতি বছর 221টি দেশের প্রায় 1,500,000 কম্প্যুটারে যায়| আরও শত শত লোক ইউটিউবের ভিডিওর মাধ্যমে এগুলি দেখেন, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তারা ইউটিউব ছেড়ে বেরিয়ে যান এবং আমাদের ওয়েবসাইটে চলে আসেন| ইউটিউব আমাদের ওয়েবসাইটে লোক এনে দেয়| ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপিগুলি প্রতি মাসে 46টি ভাষায় প্রায় 120,000 কম্প্যুটারে প্রচারিত হয়| ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপিগুলি গ্রন্থসত্ত্ব দ্বারা সংরক্ষিত নয়, কাজেই প্রচারকগণ আমাদের অনুমতি ছাড়াই এইগুলি ব্যবহার করতে পারেন| মুসলিম এবং হিন্দু রাষ্ট্রসমেত, সমগ্র পৃথিবীতে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার এই মহান কাজে সাহায্য করার জন্য কিভাবে আপনি একটি মাসিক অনুদান প্রদান করতে পারেন তা জানতে অনুগ্রহ করে এখানে ক্লিক করুন|

যখনই আপনি ডঃ হেইমার্‌সকে লিখবেন সর্বদা তাকে জানাবেন যে আপনি কোন দেশে বাস করেন, অথবা তিনি আপনাকে উত্তর দিতে পারবেন না| ডঃ হেইমার্‌সের ই-মেল ঠিকানা হল rlhymersjr@sbcglobal.net |




নোহের জাহাজ

(আদিপুস্তক থেকে ৮১ সংখ্যার সংবাদ)
NOAH’S ARK
(SERMON #81 ON THE BOOK OF GENESIS)
(Bengali)

লেখক : ডঃ আর এল হাইমার্স, জে আর।
By Dr. R. L. Hymers, Jr.

২০১৪ সালের, ১লা জুন, সকালবেলা সদাপ্রভুর দিনে লস এঞ্জেলসের ব্যাপটিষ্ট ট্যাবারন্যাকলে একটি সংবাদ প্রচারিত হয়েছিল
A sermon preached at the Baptist Tabernacle of Los Angeles
Lord’s Day Morning, June 1, 2014

“তুমি গোফর কাঠের একটি জাহাজ তৈরী কর; সেই জাহাজের মধ্যে কুঠরি নির্মাণ করিবে, ও তাহার ভিতরে ও বাহিরে ধুনা দিয়া লেপন করিবে” (আদিপুস্তক ৬:১৪)|


কয়েক সপ্তাহ আগে হলিউড বাজারে উদ্ভাবনশীল এক মুখ্য চলচ্চিত্র ছাড়ে যার নাম “নোহ”| শত শত হাজার হাজার লোক ও যুবক যুবতী এটি দেখেছেন| আমি একটা প্রতিবেদন লিখেছিলাম যার শিরোনাম “‘নোহ’ যে চলচ্চিত্র তা শয়্তান সম্বন্ধীয়!”(এটা পড়ার জন্য এখানে ক্লিক্ করুন) | হ্যাঁ, সেই চলচ্চিত্রে বেশকিছু শয়্তানিক উপাদান ছিল, আর আমি এটা দেখার জন্য কারোর কাছেই অনুমোদন করবো না| আর এই চলচ্চিত্রের যদিও বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা প্রকৃতপক্ষে সত্য| এতে সেই প্লাবনকে বর্ণনা করা হয়েছে একটু বাস্তবসম্মত ভাবে, আর সেটা জাহাজের বিশ্বাসণীয় এক চিত্রকে তুলে ধরেছে| তখন থেকে এখন পর্যন্ত বহু যুবক ব্যক্তি মনে করছে যে সেই জাহাজটি ছিল আনন্দমুখর একটা ছোট নৌকার মতো যার মধ্যে রয়েছে জন্তু জানোয়ার, আর নোহ যেন সেই ছোট নৌকার জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে হাসছে| সেটা তো ছিল কেবলমাত্র এক ব্যঙ্গাত্মক চিত্র যেটা সান্ডে স্কুলের ছেলেমেয়েরা দেখেছে| আমার কাছে ছোট্ট ছেলে মেয়েদের সেই বইয়ের মতোই এই চলচ্চিত্রটা একটা শয়্তানিক বিষয়! তারা জলপ্লাবন ও জাহাজের বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে এক ভ্রান্ত ধারনা তুলে ধরে| আমার মনে হয় প্রচারকেরা যেন তাদের যুবক ব্যক্তিদের এই কথাই বলে যে এই চলচ্চিত্র এক শয়্তানিক বিষয়| আর, আমার মনে হয় প্রচারকেরা, যেন তাদের মন্ডলীতে সান্ডে স্কুলের ঘরে গিয়ে ছেলে মেয়েদের সেই সমস্ত বইগুলো ছুঁড়ে ফেলে দেন যার উপরে নোহের জাহাজের এই চিত্রটা রয়েছে! তাদের সেই সমস্ত বই ছুঁড়ে ফেলে দিন! ব্যঙ্গচিত্রের মধ্যে যে জলপ্লাবন চিত্র রয়েছে তা সেই বিষয়ে এক সাংঘাতিক সংবাদ বহন করে নিয়ে চলছে! যেটা সমানভাবেই শয়্তানের! সেই জাহাজ ও জলপ্লাবন কোন কৌতুকের বিষয় নয়!

এখন, আমি নোহ ও জাহাজের বেশ কিছু সংবাদ প্রদান করছি| আজকের সন্ধ্যাবেলা আমি যে সংবাদ প্রদান করবো তার শিরোনাম, “কিন্তু নোহ অনুগ্রহ লাভ করলেন”(এটা পড়ার জন্য এখানে ক্লিক্ করুন) | কিন্তু আজকের সকালে আমি কেবল জাহাজের বিষয়েই বলবো| সেখানে এমন কোন প্রশ্নই থাকতে পারে না যে নোহের বিবেচিত বিষয়ে পুরানো নিয়মের মধ্যে যে চিত্র, তা নূতন নিয়মের মধ্যে এমন কিছুর প্রতি পূর্বাভাস ফেলে| মথি ২৪:৩৭-৩৯ পদে খ্রীষ্ট নিজে বলেছেন বাস্তবিক “নোহের সময়ের” যেরূপ হইয়াছিল মনুষ্য পুত্রের আগমনও তদ্রূপ হইবে| ২ পিতর ২:৫ পদে নোহকে ভ্রান্ত শিক্ষার ও ধর্মবিরূপতার সময়ে ধার্মিকতার প্রচারক বলে তুলনা করা হয়েছে| ১ পিতর ৩:২০-২১ পদে সেই জাহাজকে খ্রীষ্টের পরিত্রাণের এক ধরন হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে| ইব্রীয় ১১:৭ পদে সেই জাহাজকে আবার সেই দিনের জন্য এক পরিত্রাণের নিদর্শন হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে| নোহের সময়ে যে লোকেরা ছিল তারা একপ্রকার লোক ছিলেন| শেষ সময়ে অপরিত্রাণপ্রাপ্ত লোকেরা হলেন বিরুদ্ধাচারী লোক, সেই সময়ের পরিপূরক লোক| স্বধর্মত্যাগী হিসাবে বিবেচিত সময়ে নোহের প্রচার ছিল সময় সাপেক্ষ| শেষ সময়ে বিশ্বস্ত প্রচারকেরা হলেন বিরুদ্ধাচারী, সেই প্রচার বিবেচিত সময়ের পরিপূরক| সেই জাহাজ হল একটি বিবেচিত বিষয়| খ্রীষ্টের মধ্যে যে পরিত্রাণ তাও হল আবার বিরোধীতা স্বরূপ, যা হল সেই সময়ের পরিপূরক| আমি জানি খ্রীষ্টীয়ানিটির প্রারম্ভিক সময়ে প্রতিনিধিত্ব করার যে বিষয়্টা তার অপপ্রয়োগ করা হয়েছে, যেখানে প্রচারকেরা সমস্ত কিছুকেই যেন পুরানো নিয়মের এক দৄষ্টান্ত হিসাবেই বিবেচনা করে নিয়েছে| কিন্তু আমি এটাও জানি যে পুরানো নিয়মে সেখানে আবার প্রকৃত ধরন বা বিবেচিত বিষয়ও রয়েছে, সেখানে রয়েছে স্বচ্ছ বিরোধীতার বিপরীত ভাব, যার ধরন কেবলমাত্র নূতন নিয়মেই সেই ধরন বা বিবেচিত বিষয়কে সিদ্ধ করছে| দৃষ্টান্ত হিসাবে, ইব্রীয় বইয়ের প্রায় অংশেই বিরোধীতার বিষয়গুলোকে বিবেচিত করা হচ্ছে| যীশু মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হওয়ার পরে তিনি তাঁর নিজের দুই অনুগামীর সঙ্গে বসেন

“পরে তিনি মোশি হইতে সমুদয় ভাববাদী হইতে আরম্ভ করিয়া সমুদয় শাস্ত্রে তাঁহার নিজের বিষয়ে যে সকল কথা আছে, তাহা তাহাদিগকে বুঝাইয়া দিলেন” (লূক ২৪:২৭)|

নোহের জাহাজের বিষয়ে খ্রীষ্ট তাদের যা কিছু বলেছিলেন তা ছিল জগতের পরিত্রাতা হিসাবে নিজেরই যে এক বিবেচিত বিষয় সেই বিষয়ে আমার মধ্যে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই| ঠিক যেমনভাবে সেই জাহাজ জলপ্লাবনের হাত থেকে ঈশ্বরের লোকেদের উদ্ধার করেছিল, তেমনিভাবে খ্রীষ্টও ঈশ্বরের লোকেদের ভীষন বিচার ও নরকের হাত থেকে উদ্ধার করবেন| সেই জাহাজ ছিল এক প্রকার আদর্শ, যীশু খ্রীষ্ট হলেন তার বিপরীত এক বিবেচিত বিষয়, যা হল সেই ধরনের এক পূর্ণতা! কেবলমাত্র বাইবেল প্রত্যাখানকারী এক উদারপন্থী ব্যক্তি হ্যারি ইমারসন ফসডিক্ই তা অস্বীকার করতে পারে! কেবলমাত্র ফুলার থিয়োলজীক্যাল সেমিনারীর বা শিকাগো ডিভিনিটি স্কুলের মতো আধুনিকপন্থীরাই সেটাকে অস্বীকার করতে পারে! বাইবেলও কিন্তু সেই রকমের লোকেদের কথা ভবিষ্যবাণী করেছে যেখানে বলা হচ্ছে, “প্রথমে ইহা জ্ঞাত হও যে শেষকালে উপহাসের সহিত উপহাসকেরা উপস্থিত হইবে, তাহারা আপন আপন অভিলাষ অনুসারে চলিবে” (২পিতর ৩:৩)| আর প্রেরিত যিহুদা বলেছেন,

“কিন্তু, প্রিয়্তমেরা, ইতিপূর্বে আমাদের যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিতগন যে সকল কথা বলিয়াছেন তোমরা সেই সকল কথা স্মরণ কর; তাঁহারা তো তোমাদিগকে বলিতেন শেষকালে উপহাসকেরা উপস্থিত হইবে, তাহারা আপন আপন ভক্তিবিরুদ্ধ অভিলাষ অনুসারে চলিবে| উহারা দলভেদকারী, প্রাণিক, আত্মাবিহীন” (যিহুদা ১৭:১৯)|

এর বহু আগেই আমি শিখেছি সেই প্রকার অবিশ্বাসীদের শিক্ষাকে যেন প্রত্যাখান করি!

সুতরাং, আসুন আমাদের পাঠ্যাংশ আদিপুস্তকের প্রতি লক্ষ্য করি, ৬ষ্ঠ অধ্যায়ের, ১৪ নং পদটির প্রতি, যেখানে জাহাজের বর্ণনা প্রদান করা হয়েছে – আর কিভাবে এইটি আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের প্রতি চিত্রিত করে তা তুলে ধরেছে| ঈশ্বর নোহকে বললেন,

“তুমি গোফর কাষ্ঠ দ্বারা এক জাহাজ নির্মান কর; সেই জাহাজের মধ্যে কুঠরি নির্মান করিবে, আর তাহার ভিতরে ও বাহিরে ধুনা দিয়া লেপন করিবে” (আদিপুস্তক ৬:১৪)|

অনুগ্রহ করে এখানে আপনার বাইবেলটি খোলা রাখুন| আমেন|

আর্থার ডব্লিউ. পিঙ্ক বলেছেন, “সেই জাহাজ…যেখানে [নোহ] এবং তার পরিবার… ঈশ্বরের ক্রোধ এবং ঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আশ্রয় পেয়েছিল, তা হল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের পরিত্রাণ লাভের এক পরিষ্কার এবং সবথেকে উপলব্ধি করার মতো এক আদর্শ যার বিষয়ে শাস্ত্রের সব জায়্গাতেই দেখতে পাওয়া যায়” (Arthur W. Pink, Gleanings in Genesis, Moody Press, 1981 edition, p. 103)| আর আমি লক্ষ্য করেছি যে ডাঃ জন গিল, অষ্টাদশ শতাব্দীতে আমাদের ব্যপটিষ্ট ব্যাখ্যাকারীদের এক মহান ব্যক্তি, বারবার সেই জাহাজকে বলেন যে তা হল খ্রীষ্টের এক আদর্শ (John Gill, D.D., An Exposition of the Old Testament, The Baptist Standard Bearer, 1989 reprint, vol. 1, pp. 50-51)|

“তুমি গোফর কাষ্ঠ দ্বারা এক জাহাজ নির্মান কর; সেই জাহাজের মধ্যে কুঠরি নির্মান করিবে, আর তাহার ভিতরে ও বাহিরে ধুনা দিয়া লেপন করিবে” (আদিপুস্তক ৬:১৪)।

১. প্রথম, সেই জাহাজটি ছিল ঈশ্বরের দ্বারা পরিকল্পিত ।

বিচার যে আসতে চলেছে এই বিষয়ে নোহের মধ্যে এক সচেতনতা বোধ ছিল| কিন্তু ঈশ্বর যতক্ষণ পর্যন্ত না তার কাছে জাহাজ তৈরী করার কথাটা প্রকাশ করলেন ততোক্ষণ পর্যন্ত নোহের কাছে জাহাজ তৈরীর কোন কল্পনাই ছিল না|

কিন্তু ঈশ্বর জানতেন যে তিনি কি করতে চলেছেন| আপনি দেখতে পাচ্ছেন, নোহ ও যারা তার সঙ্গে ছিলেন তারা এই জগৎ সৃষ্টি হওয়ার বহু আগে থেকেই ঈশ্বরের দ্বারা মনোনীত ছিলেন| প্রেরিত পৌল বলেছেন, “জগৎ সৃষ্টির পূর্ব হইতেই ঈশ্বর আমাদের মনোনীত করিয়াছেন” (ইফিষীয় ১:৪)| কারা সেই জাহাজের মধ্যে থেকে রক্ষা পাবে সেটাই কেবল ঈশ্বর মনোনীত করেন নি, কিন্তু এই জগৎ সৃষ্টি হওয়ার আগে থেকেই ঈশ্বর এই পরিকল্পনাও করেছিলেন আমাদের উদ্ধার করার জন্য খ্রীষ্টকে পাঠাবেন, কেননা বাইবেল খ্রীষ্টকে বলে, “সেই খ্রীষ্ট জগৎ পত্তনের পূর্ব হইতেই হত হইয়াছিলেন” (প্রকাশিত বাক্য ১৩:৮)|

আমাদের উদ্ধার করার জন্য, ঈশ্বর যেমনভাবে খ্রীষ্ট যীশুকে, বিপরীত আদর্শ বলে কল্পনা করেছিলেন যেন এই জগৎ সৃষ্টির আগে থেকেই খ্রীষ্টের মধ্যে দিয়ে আপনাকে উদ্ধার করেন, ঠিক তেমনভাবেই তিনি এক বিবেচিত বিষয়, সেই জাহাজের পরিকল্পনা করেছিলেন| অধর্মচারীদের জলপ্লাবনের দ্বারা ধ্বংস করার আগে তিনি পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন যে নোহকে তিনি জাহাজের মধ্যে উদ্ধার করবেন|

আপনারা যারা খ্রীষ্ট বিশ্বাসী তাদের প্রত্যেকেরই আনন্দ করা উচিৎ এই জন্য যে জগৎ সৃষ্টির আগে থেকেই ঈশ্বর আপনাকে মনোনীত করে রেখেছেন খ্রীষ্টের মধ্যে দিয়ে উদ্ধার করার জন্য – ঠিক যেমন প্লাবনের জল দ্বারা জগতের অঈশ্বরীয় সমস্ত কিছু ধ্বংস হওয়ার বহু আগেই তিনি পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন যে তিনি নোহকে জাহাজে রক্ষা করবেন! আপনি যদি খ্রীষ্ট যীশুর মধ্যে আছেন, তবে আপনি বিচারের যে ঝঞ্ঝা আসতে চলেছে তা থেকে সুরক্ষিত!

হে পরিত্রাতা, আমাকে লুকিয়ে রাখ, লুকাও, যতক্ষণ না জীবনের ঝড়ে উত্তীর্ণ হই: স্বর্গীয় পরিচালনায় আমি সুরক্ষিত; আহা পরিশেষে আমার আত্মাকে গ্রহণ কর! (“Jesus, Lover of My Soul” by Charles Wesley, 1707-1788)|

২. দ্বিতীয়, ইহার অধিবাসীদের রক্ষা করার জন্যই জাহাজ তৈরী হয়েছিল ।

এটা কেবলমাত্র একটা জাহাজই ছিল না| মোটেই নয়! ইব্রীয় শব্দে “জাহাজ” কে অনুবাদ করা হয়েছে “টায়বাও” বলে| এর অর্থ “একটি বাক্স” (সুদৃঢ়)| বাক্স বলে যে শিরোনাম ইব্রীয় ভাষাতেও সেই একই শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে যার মধ্যে শিশু মোশি নীলনদে ভাসমান অবস্থায় ছিল| এই একই ইব্রীয় শব্দকে আদিপুস্তক ৫০:২৬ পদে আবার অনুবাদ করা হয়েছে “শবাধার” হিসাবে| ইহাতে কোন হাল ছিল না| সেখানে কোন পালও ছিল না| আমি নিশ্চিত যে সর্বোচ্চমাত্রায় ধারনক্ষমতা দেওয়ার জন্য এর নিচের অংশটা ছিল সমতল| এটা ছিল কেবলমাত্র একটা বাক্স| ঈশ্বর বলেছিলেন, “আমাকে একটি ‘বাক্স’ তৈরী করে দাও, এর ভিতরে ও বাইরে পিচ লাগাও”| “পিচ” বা আলকাতরা শব্দটি অনুবাদ করা হয়েছে “কফার” থেকে – যার ক্রিয়াপদ হলো “কাফার”| আর সেটা হল একই শব্দ যার অনুবাদ হল “প্রায়শ্চিত্ত” যার বিষয়ে পুরানো নিয়মের ৭০টি বিভিন্ন জায়্গায় উল্লেখ আছে| আর এইভাবেই লেবীয় ১৭:১১ পদে এই শব্দকে সেইভাবেই অনুবাদ করা হয়েছে, “ইহা হলো সেই রক্ত যা আত্মার জন্য প্রায়শ্চিত্ত সাধন করে”| যেহেতু তারা একই ইব্রীয় শব্দ থেকে আসছে, তাই আদিপুস্তক ৬:১৪ কে আমরা এইভাবে শব্দান্তরিত করতে পারি যে, “তুমি গোফর কাঠ দ্বারা একটি জাহাজ তৈয়ার কর আর তার ভিতর ও বাহিরে এক প্রায়শ্চিত্ত লেপন কর”, যা হলো কিনা রক্ত! সুতরাং, এখানে আপনার একটা প্রকান্ড বাক্স রয়েছে, যা আলকাতরা দিয়ে আচ্ছাদিত| ডাঃ হেনরি এম. মরিস বলেছেন, “কাফার…প্রায়ই পরবর্তী সময়ে অনুবাদ করা হয়েছে ‘প্রায়শ্চিত্ত’ হিসাবে| বিচার কালের জলের বিরুদ্ধে সুরক্ষা করে আচ্ছাদিত করার মধ্যে, এটি সুন্দরভাবেই খ্রীষ্টের আদর্শকে বহন করে” (The New Defender’s Study Bible by Henry M. Morris, Ph.D., World Publishing, 2006, p. 34; note on Genesis 6:14)|

সুতরাং, এখানে রয়েছে আমাদের জাহাজ| এটা হলো কাঠ দিয়ে তৈরী একটা প্রকান্ড বাক্স, এবং যার ভিতর ও বাহির আলকাতরা দিয়ে প্রলেপিত, যা নিখুঁতভাবে সেই বিরাট জলপ্লাবনের জল থেকে তাকে সুরক্ষার জন্য অবরুদ্ধ করা হয়েছে| ডাঃ এম. আর. ডিহান বলেছেন,

সেই জাহাজটি…এক প্রকান্ড শবাধারের মতো| প্রসঙ্গত, “জাহাজ” হিসাবে যে শব্দ অনুবাদ করা হয়েছে তাকে আদিপুস্তক ৫০:২৬ পদে “শবাধার” বলে অনুবাদ করা হয়েছে| সেই জাহাজ ছিল আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মৃত্যুর এক প্রতীক|
     আমরা খুব সহজেই কল্পনা করতে পারি যে নোহের সময়ে কি রকমই না অবজ্ঞার পাত্র ছিল যারা তার কাজকে লক্ষ্য করেছিল| কি উপহাসকর বিষয়ই, না তারা চিন্তা করেছিল, একটা কালো বাক্স তৈরী করা আর সেটাকে দেখতে ঠিক একটা কফিনের বাক্সের মতো, তাও আবার প্লাবনের ভবিষ্যবাণী করছে যেখানে কি না তখনও পর্যন্ত পৃথিবীতে বৃষ্টি হয় নি (M. R. DeHaan, M.D., The Days of Noah, Zondervan Publishing House, 1971 edition, p. 173)|

আজকে বাইবেলের প্রতি বহু লোক উপহাস করে ও হাসতে থাকে| এমনকি লোকেরা এই প্রকার জলপ্লাবনকে বলে, “উপহাসকর বিষয়”| কিন্তু যখন ঈশ্বরের বিচার তাদের উপর নেমে আসবে তখন তারা কি করবে? আর আপনি যদি খ্রীষ্টের মধ্যে সুরক্ষিত না থাকেন তাহলে আপনিই বা কি করবেন?

হে পরিত্রাতা, আমাকে লুকিয়ে রাখ, লুকাও, যতক্ষণ না জীবনের ঝড়ে উত্তীর্ণ হই: স্বর্গীয় পরিচালনায় আমি সুরক্ষিত; আহা পরিশেষে আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!

৩. তৃতীয়, ঈশ্বরের বিচার থেকে নিস্তার লাভের জন্য জাহাজটি ছিল এক আশ্রয়স্থল ।

সেই জাহাজটি ছিল এক নিরাপদ জায়্গা| প্র্কৃতপক্ষে, এটি ছিল সুরক্ষার একমাত্র জায়্গা| ঈশ্বরের বিচারের হাত থেকে সুরক্ষা লাভ করার জন্য সেটা ছিল একমাত্র সুরক্ষাকারী জায়্গা|

এই জগতের লোকেরা বলে যে ঈশ্বরের সঙ্গে শান্তি খুঁজে পাওয়ার জন্য সেখানে “অনেক পন্থা” রয়েছে| কিন্তু তারা ভুল| নোহের সময়ে ঈশ্বরের বিচারের হাত থেকে সুরক্ষা লাভ করার ক্ষেত্রে ঈশ্বর কেবল একটি রাস্তাই জোগাড় করে দিয়েছিলেন – আর সেই বিচারের হাত থেকে পালানোর একমাত্র জায়্গাটা ছিল সেই জাহাজ| আজকে তাঁর অভিশাপ বা ক্রোধ থেকে বাঁচার জন্য ঈশ্বর যে কেবলমাত্র একটি পন্থা দিয়েছেন তা হলো যীশু খ্রীষ্ট| বাইবেল বলে,

“আর অন্য কাহারও কাছে পরিত্রাণ নেই: কেননা আকাশের নীচে মনুষ্যদের মধ্যে দত্ত আর কোন নাম নেই, যে নামে আমাদের পরিত্রাণ পাইতে হইবে” (প্রেরিত ৪:১২)|

লোকে বলে থাকে, “সেটা ন্যায্য বিষয় নয়”! কিভাবে তারা সেই কথা বলে তা আমি বুঝতেই পারি না! এটা আমার কাছে যথেষ্টভাবেই ন্যায্য বিষয়! মানুষ পাপ করেছে সেই উদ্যানের মধ্যে| মানুষ পুনরায়, আরো গভীরভাবে পাপ করেছে, সেই জলপ্লাবনের পূর্বতন সময়ে ধর্মভ্রষ্ট হওয়ার দ্বারা| তাদের পাপ থেকে উদ্ধার লাভের জন্য ও বিচারের হাত থেকে উদ্ধার লাভের প্রতি ঈশ্বর এক পন্থা জোগাড় করে দিয়েছেন| কিন্তু পরিত্রাণ লাভের যে পন্থা তাকে তারা প্রত্যাখান করেছে| সেইজন্য, তারা জলপ্লাবনের মধ্যে তলিয়ে গিয়েছিল| তাহলে অন্যায়টা কোথায়? আমিতো কিছু দেখতে পাচ্ছি না| কোন সময় পাইনি আর কোন সময়ে পাবোও না! নোহের সময়ে যে সমস্যাটা ছিল তা হলো হনোকের প্রচার (যিহুদা ১৪,১৫)| তাদের মধ্যে নোহের প্রচারও ছিল (২পিতর ২:৫)| তাদের মধ্যে যে পবিত্র আত্মা ছিল তা তাদের মধ্যে যেন সংগ্রাম করছিল (আদিপুস্তক ৬:৩)| সুতরাং তাদের কোন অজুহাত নেই| আর আজকের সকালে আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করছি, “আপনি যদি যীশু ছাড়া পরিত্রাণ লাভ না করে মৃত্যুবরণ করেন তবে আপনার অজুহাত কি হতে পারে”? এটা খুব ভাল একটা প্রশ্ন| ঈশ্বর যখন জগতের বিচার করবেন তখন যদি আপনি খ্রীষ্টের মধ্যে সুরক্ষিত না থাকেন আপনার অজুহাত কি হবে?

হে পরিত্রাতা, আমাকে লুকিয়ে রাখ, লুকাও, যতক্ষণ না জীবনের ঝড়ে উত্তীর্ণ হই: স্বর্গীয় পরিচালনায় আমি সুরক্ষিত; আহা পরিশেষে আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!

৪. চতুর্থ, জাহাজে সকলের জন্য থাকার জায়্গা ছিল ।

১৭.৫ ইঞ্চি সংখ্যায় ইব্রীয়দের ছিল এক ছোট পরিমাপের কিউবিট, এবং দীর্ঘ যে কিউবিট তার পরিমাপ সংখ্যা হলো ২০.৪ ইঞ্চি| বাইবেলে আদিপুস্তক ৬:১৫ পদে জাহাজের যে পরিমাপ তা দেওয়া হয়েছে| যদি সবথেকে ছোট কিউবিট ব্যবহৃত হত, তবে সেই জাহাজ, যা কিনা তিনতলা সমান, যার মেঝের জায়্গা ৯৫,৭৯০ বর্গফুট, বা প্রায় ২.২ বর্গগজ বা একর| যদি সবথেকে বড় কিউবিট ব্যবহৃত হত, তবে সেই জাহাজের তিনটি তলাতেই ৪৩,৩৫০ বর্গফুট সমান জায়্গা ছিল| আর এই তিনটে একসঙ্গে মিলে হবে ১৩০,০৫০ বর্গফুট, যার পরিমাপ হবে প্রায় তিন বর্গগজ বা একর। এর সর্বমোট উচ্চতা ছিল ৫১ ফিট, যা কিনা পাঁচতলা বাড়ির থেকে সামান্য ছোট| যা হতে পারে ২,২১০,৮৫০ কিউবিক ফিট, বা দুই মিলিয়ান কিউবিক ফুটেরও বেশি! এতে যথেষ্ট জায়্গা ছিল যাতে বড় আকারের মেষদের উচ্চতাসম্পন্ন ১২৫,০০০ টি পশু রাখা যেতে পারে| প্রাণীবিজ্ঞানীরা মূল্যনিরূপণ করেন যে সেখানে প্রায় ১০০ র কিছু কম সংখ্যায় চারপায়ে চলা পশু, ১৭০ প্রজাতিরও কম পাখি থাকার জায়্গা ছিল| সেই জাহাজ যার কেবল মেঝের পরিমাপ ১৩০,০০০ বর্গফুট তাতে যে পরিমানে পশুপাখি স্থান পেয়েছিল তার অনেক গুণ বেশি প্রজাতিকে স্থান দিতে পারতো| ডাঃ হেনরি এম. মরিস বলেছেন,

     যেহেতু, আমরা ইতিমধ্যেই দেখেছি, সেই জাহাজ যতগুলো সম্ভব সংখ্যায় একশতপঁচিশ হাজার মেষ বহন করতে পারে, আর যখন জগতের পশুর গড় সংখ্যা সেই সমস্ত মেষের অর্দ্ধেক, তাই এটাই সুস্পষ্ট যে এর ৬০ শতাংশের বেশি জায়্গা পশুর জন্য ব্যবহার না করলেও হবে…আর এইভাবেই, জাহাজের নির্দ্দিষ্ট পরিমাপ আদর্শগত ভাবেই পশুদের জন্য যথাযোগ্য ছিল এর মধ্যে বহন করার জন্য…আর সেইসঙ্গে পশুদের খাদ্য বহন করার জন্য, নোহ ও তার পরিবারের লোকেদের বসবাস করার জন্য, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উদ্দেশ্য সাধনের জন্য (Henry M. Morris, Ph.D., The Genesis Record, Baker Book House, 1986 edition, p. 185)|

হে পরিত্রাতা, আমাকে লুকিয়ে রাখ, লুকাও, যতক্ষণ না জীবনের ঝড়ে উত্তীর্ণ হই: স্বর্গীয় পরিচালনায় আমি সুরক্ষিত; আহা পরিশেষে আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!

যদিও “নোহ” চলচ্চিত্র সার্বিকভাবে কিছুটা শয়্তানিক, তবুও অদ্ভুতভাবেই সেই জাহাজ নিজে থেকেই সুন্দর ও একটু সত্য এবং বাইবেলের প্রতি সত্য| ডাঃ মরিস তাদের বিষয়ে যেমন করে বর্ণনা করেছেন সেইভাবে পশু ও পাখিরা জাহাজের মধ্যে প্রবেশ করেছিল| তারা দৈবিক তাগিদেই সেখানে এসেছিল আর যাদের যেমনভাবে থাকার প্রয়োজন সেইভাবেই বাসা বেঁধে নিজের মতো করে সেখানে ছিল| চলচ্চিত্রের এই অংশটি খুবই সুন্দর এবং বাইবেলের প্রতি সত্য| কিন্তু, আবারও বলি, এই ছবিটি দেখবেন না| শয়্তানের সংবাদ যে কোন প্রকার ক্ষতি এবং বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে| তথাপি, এই বিরাট জাহাজ, আমাদের কল্পনার মধ্যে এক বিস্ময়কর অনুপ্রেরণা নিয়ে আসতে পারে| এই রকমের এক প্রকান্ড-অসুরতুল্য কালো জাহাজের বিষয়ে চিন্তা করাটা যেন আমার নিঃশ্বাস প্রঃশ্বাসকে দূর করে দেয়, তিনতলা উঁচু জাহাজ, ঢেউয়ের উপরে ভাসমান হয়ে রয়েছে, ঈশ্বরের দ্বারা অদ্ভুতভাবে নক্সাকৃত এমনকি যাকে ঢেউয়ের ধাক্কা ৯০ ডিগ্রী কোনে খাড়া করে দিলেও তা উল্টে পড়ে না|

বেশ কিছুদিন যাবৎ যখনই সম্ভব হয়, তখনই আর্মেনিয়ার উচ্চ আরারত পর্বতে, গ্রীষ্মের প্রকোপে এক অনুসন্ধান প্রায়ই চলে| সম্ভবত কোন এক গ্রীষ্মে তারা সেই জাহাজের অস্ত্বিত্ব খুঁজে পায়| আমার মনে হয় এই যুগের কাছাকাছি সময়ের আগে ভীষন সেই মহা বিচার পতিত হওয়ার আগে তারা খুবই ভালো অবস্থায় ছিল| কিন্তু সেই সমস্ত ভূতত্ত্ববিদেরা সেটা খুঁজে পাক বা না পাক, আমার ব্যায়ামাগারের সব আর্মেনিয়ান লোকেরা বলে যে সেটা সেখানে ছিল| এক বৄদ্ধ ব্যক্তি বলেন যে তার ঠাকুর্দা জাহাজের একটা টুকরোকে বরফের মধ্যে থেকে উদ্গত হতে দেখেছেন| তিনি বলেন, “এর সমস্তটাই ছিল কালো রঙের| তিনি তো আশাই করতে পারেননি যে এটা কালো হবে”|

আমি ও আমার পরিবার বেশ কিছুদিন আগে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলাম| আমার ঠাকুর্দা সেখানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, আর আমিতো সেখানকার সমস্ত কিছু খুব উপভোগ করেছিলাম| সেখানে আমরা ডোভার ক্যাসেল বা দূর্গে গিয়েছিলাম| হতে পারে আপনি হয়তো “ডোভারের হোয়াইট ক্লিফ” এর নাম শুনে থাকবেন| বহু জাহাজ গত কয়েক শতাব্দী যাবৎ নীচে সেই পাথরের পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে দূর্ঘটনার মধ্যে পড়েছে| কিন্তু আমরা যখন সেখানে যাই তখন আমি সেখানকার ডোভার দূর্গের বিষয়ে কোন মনযোগ দিইনি| আপনি যদি কোন একটি দূর্গ বা ক্যাসেল একবার দেখেছেন, তবে সেটা আপনার দেখা হয়ে গিয়েছে! আমি একটু দূর থেকে কিছু একটা দেখেছিলাম যা আমার মনযোগ আকর্ষন করে| সেটা ছিল প্রকান্ড| আপনি হয়তো বলতে পারেন এটা ছিল প্রাচীনতম| আমি আরো একটু কাছে এগিয়ে গেলাম সেটাকে দেখার জন্য| এর উপর থেকে যেন আমি আমার চোখকে ফিরিয়ে নিতে পারছিলাম না| এটা তো সেখানেই দাঁড়িয়ে রয়েছে, আশি ফুটের মতো একটা লাইট হাউস তৈরী করা হয়েছে, তারা বলে, যে এটা গত শতাব্দীতে তৈরী হয়েছে! এটা ছিল লম্বা, কালো চোঙা যা আকাশের দিকে অনেক উঁচুতে মাথা সোজা করে দাঁড়িয়ে আছে| আমি এর ভিতরের দিকে তাকালাম আর দেখলাম এর ভিতরের দেওয়ালের উপরে রয়েছে শতাব্দী কালের কালো চলচ্চিত্রের মতো ছবি| প্রেরিত যোহন জীবিত অবস্থায় যখন পাটম নামের দ্বীপে ছিলেন তখন রোমীয়েরা এটা তৈরী করেছিল! ডোভার সমুদ্র সৈকতের অগ্রভাগে যে পাথর রয়েছে তার হাত থেকে বাঁচার জন্য সব জাহাজকে ঐ পাথর থেকে দূরে রাখার জন্য তারা এর ভিতরে গাছ জ্বালিয়ে জাহাকে সতর্ক করে দিত| প্রাচীনতম সেই লাইটহাউসের কেবলমাত্র এই মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান দেখে, আমার গায়ের চামড়া যেন ভক্তিপূর্ণ শ্রদ্ধায় ঝন্ঝন্ করে উঠলো, আমার মনে হয়, সেটা এমনভাবে অস্পষ্ট হয়ে প্রতীয়মান হয়ে উঠেছিল যে সেই জাহাজ নিশ্চিতভাবেই বেশ কিছু হাঁ করা বালকদের আচ্ছন্ন অবস্থায় প্রতীয়্মান করে তুলেছিল যারা সেই অন্ধকারের মধ্যে এটাকে দেখতে এসেছিল, এটা তখন যেন গোপনেই সরে যাচ্ছে আর তখন তারা এর প্রতি পাথর ছুঁড়েছিল, আর তার ভেতর থেকে ঝঙ্কারের আওয়াজ শুনে, তারা হাসতে হাসতে ছুটে পালিয়েছিল - যে রাত্রে প্লাবন এসেছিল তার আগের রাত্রেই যেন এটা তাদের ভাসিয়ে নিয়ে গেল! এরপরে লোকেরা কাঁদতে থাকে আর চিৎকার করতে থাকে, মাটি থেকে উপরে আসা গাছের গুঁড়িতে নিজেরা ঝুলতে থাকে, পাহাড়ের চূড়ায় ও পর্বতে নিজেদের দৃঢ় করে রাখার চেষ্টা করে, যখন সেই প্রকান্ড দিয়াবল নেপচুন মন্থনকারী প্লাবনের মধ্যে থেকে উঠতে শুরু করে, এবং জমকালো ট্রিটন তার নিজের ক্রোধের তূরী বাজাতে শুরু করে - আর ঈশ্বরও গভীর জলধারা বর্ষন করতে শুরু করে, এবং আকাশের বাতায়ন সকলও তখন উন্মুক্ত হয়ে পড়ে,

“আর এইরূপে ভূমন্ডল নিবাসী, সমস্ত মনুষ্য, আর পশু, আর সরীসৃপ, আর জীব ও আকাশীয় পক্ষীসকল; সকলে পৃথিবী হইতে উচ্ছিন্ন হইল: আর কেবল নোহ, ও তাহার সঙ্গী জাহাজস্থ প্রাণীরা বাঁচিলেন” (আদিপুস্তক ৭:২৩)|

হে পরিত্রাতা, আমাকে লুকিয়ে রাখ, লুকাও, যতক্ষণ না জীবনের ঝড়ে উত্তীর্ণ হই: স্বর্গীয় পরিচালনায় আমি সুরক্ষিত; আহা পরিশেষে আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!

“আর নোহ ও তাহার সঙ্গে যাহারা জাহাজের মধ্যে ছিল, তাহারাই জীবিত থাকিল” (আদিপুস্তক ৭:২৩) – আর সেই জাহাজ খ্রীষ্টকেই “চিত্রিত” করে! আপনি যদি খ্রীষ্টে রয়েছেন, তবে আসন্ন যে বিচার সেখান থেকে আপনি সুরক্ষিত আছেন| আপনি যদি খ্রীষ্টে নেই, তবে আপনি মৃত্যুতে নয়, কিন্তু অগ্নিহ্রদে ডুবে যাবেন! আঃ, না – টেনে নিয়ে যাওয়া আর বার বার ডুবে যাওয়ার প্রতি সেই যে জ্বলন্ত হ্রদ তার কোন শেষ নেই, এটি আবার কোন সময়ে শীতল হয়েও যায় না, তা কিন্ত চিরকাল আর চিরকাল ও চিরকালের জন্য কেবল জ্বলতেই থাকে!

আপনি কিভাবে উদ্ধার পেতে বা বাঁচতে পারেন? জাহাজের মধ্যে আসুন! সেই জাহাজ খ্রীষ্টের এক পূর্বতন চিত্র| খ্রীষ্টের রক্ত হলো কালো পিন্ডের এক আদর্শ! ভিতরে আসুন! জাহাজের ভিতরে আসুন! আগেই চিরকালের তরে সম্পূর্ণভাবে দেরী হওয়ার থেকে খ্রীষ্টের কাছে আসুন|

সেই সমস্ত বালকেরা যারা সেই ঝোপঝাড়ের মধ্যে দিয়ে জাহাজের দিকে তাকিয়ে ছিল আর প্লাবন আসার আগের রাত্রিতে তাকে দেখে হেসেছিল! সেই বালকেরাই আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ে জাহাজটি ভাসমান হয়ে ওঠা অবস্থায় এর দিকে ঢিল ছুঁড়েছিল| সেই বালকেরাই চিৎকার করে বলে উঠেছিল, “হে ঈশ্বর, আমাদের জাহাজের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হোক! আমাদের ডুবে যেতে দেবেন না”! সেই বালকেরা যারা অনন্তকাল ধরে অনন্তকালীন অগ্নিতে চিৎকার করছে! সেই বালকেরা আপনাকে বলবে, যদি আপনি পারেন তবে, “ঈশ্বরের অভিশাপ থেকে পলায়ন করুন! সদাপ্রভুর প্রচন্ড প্র্কোপের হাত থেকে পলায়্ন করুন! নিজের প্রতি পিছন ফিরে তাকাবেন না! কিভাবে প্রবেশ করতে হবে সেই ভেবে চিন্তা করবেন না! আসুন! “তাঁর উপরে সাহস করুন, সম্পূর্ণভাবে তাঁর উপরে সাহস রাখুন” – নিজেকে সম্পূর্ণভাবে তাঁর উপরে নিমজ্জিত করুন, “অন্য কেউ যেন আপনার নির্ভরতাকে হরণ করে নিয়ে না যায়”| নিজেকে জাহাজের সেই দরজার কাছে ছুঁড়ে ফেলুন – “তাঁর উপরে সাহস করুন, সম্পূর্ণভাবে তাঁর উপরে সাহস রাখুন” – কেননা যে অভিশাপ ও আসন্ন বিচার আসতে চলেছে তা থেকে কেবল খ্রীষ্টই আপনাকে রক্ষা করতে সমর্থ, আর তিনিই কেবলমাত্র আপনাকে তাঁর পবিত্র রক্তের দ্বারা পরিষ্কার করতে পারেন”! আমেন|

উঠে দাঁড়ান আর আপনার গানের পাতার ৭ নং গানটি গাইতে থাকুন, “আইস, পাপীরা আইস”|

আইস, পাপীরা আইস, হতদরিদ্র ও নগ্ন, দূর্বল ও আহত, অসুস্থ এবং ক্ষতযুক্ত,
     আপনাকে উদ্ধার করার জন্য যীশু প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে, সম্পূর্ণ দয়া, প্রেম ও পরাক্রমে;
তিনি সমর্থ, তিনি সমর্থ, তিনি ইচ্ছা রাখছেন, আর সন্দেহ করো না!
     তিনি সমর্থ, তিনি সমর্থ, তিনি ইচ্ছা রাখছেন, আর সন্দেহ করো না!
(“Come, Ye Sinners” by Joseph Hart, 1712-1768).

আপনি যদি আমার সঙ্গে এবং অন্যান্য পরামর্শকারীদের সঙ্গে কথা বলতে চান, তবে এই মূহুর্তে অডিটোরিয়ামের পিছনে দিকে হেঁটে যান| ডাঃ কাগন আপনাকে আর একটি ঘরে নিয়ে যাবেন যেখানে আপনার পরিত্রাণের বিষয়ে আমরা কথা বলতে পারবো| আমেন।

(সংবাদের পরিসমাপ্তি)
ডাঃ হাইমার্সের সংবাদ আপনি প্রতি সপ্তাহে ইন্টারনেটের মাধ্যমে
www.realconversion.com এই সাইটে পড়তে পারেন। ক্লিক করুন “সংবাদের হস্তলিপি”

আপনি ডাঃ হাইমার্সকে মেইল পাঠাতে পারেন rlhymersjr@sbcglobal.net - আপনি
তাকে পত্র লিখতে পারেন P.O. Box 15308, Los Angeles, C A 90015.এই ঠিকানায়
। আপনি তাকে টেলিফোন করতে পারেন (818) 352-0452.

এই সুসমাচারের ম্যানুস্ক্রিপ্ট এর ওপর ডাঃ হাইমসের কোন কপিরাইট নেই। আপনারা
ইহা ব্যাবহার করতে পারেন ডাঃ হাইমসের অনুমতি ছাড়াই। অবশ্য, ভিডিও মেসেজ
সবই কপিরাইটের সহিত আছে এবং কেবলমাত্র তার অনুমতি নিয়েই ব্যাবহার করা যাবে।

সংবাদের আগে শাস্ত্রাংশ পাঠ করেছেন মি. আবেল প্রধুম্মে: আদিপুস্তক ৬:১২-১৭ |
সংবাদের আগে একক সংগীত পরিবেশন করেছেন মি. বেঞ্জামিন কিনকেড গ্রিফিত:
“Jesus, Lover of My Soul” (by Charles Wesley, 1707-1788).


খসড়া চিত্র

নোহের জাহাজ

(আদিপুস্তক থেকে ৮১ সংখ্যার সংবাদ)

লেখক : ডঃ আর এল হাইমার্স, জে আর।

“তুমি গোফর কাষ্ঠ দ্বারা এক জাহাজ নির্মান কর; সেই জাহাজের মধ্যে কুঠরি নির্মান করিবে, আর তাহার ভিতরে ও বাহিরে ধুনা দিয়া লেপন করিবে” (আদিপুস্তক ৬:১৪)|

(মথি ২৪:৩৭-৩৯; ২পিতর ২:৫; ১পিতর ৩:২০-২১; ইব্রীয় ১১:৭; লূক ২৪:২৭;
২পিতর ৩:৩; যিহুদা ১৭:১৯)

১. প্রথম, সেই জাহাজটি ঈশ্বরের দ্বারা পরিকল্পিত, ইফিষীয় ১:৪; প্রকাশিত বাক্য ১৩:৮ |

২. দ্বিতীয়, ইহার অধিবাসীদের রক্ষা করার জন্যই জাহাজটি তৈরী হয়েছিল, আদিপুস্তক ৫০:২৬; লেবীয় ১৭:১১ |

৩. তৃতীয়, ঈশ্বরের বিচার থেকে নিস্তার লাভের প্রতি জাহাজটি ছিল এক আশ্রয়স্থল, প্রেরিত ৪:১২; যিহুদা ১৪:১৫; ২পিতর ২:৫; আদিপুস্তক ৬:৩ |

৪. চতুর্থ, সেই জাহাজে সকলের জন্য জায়্গা ছিল, আদিপুস্তক ৭:২৩ |