এই ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য হল ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপি এবং ধর্ম্মোপদেশের ভিডিওগুলি বিশ্বব্যাপী পালক ও মিশনারিদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বে, যেখানে ধর্ম্মতত্ত্বমূলক সেমিনারী বা বাইবেল স্কুল থাকলেও খুব কম রয়েছে|
এই সমস্ত ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপি ও ভিডিওগুলি www.sermonsfortheworld.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এখন প্রতি বছর 221টি দেশের প্রায় 1,500,000 কম্প্যুটারে যায়| আরও শত শত লোক ইউটিউবের ভিডিওর মাধ্যমে এগুলি দেখেন, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তারা ইউটিউব ছেড়ে বেরিয়ে যান এবং আমাদের ওয়েবসাইটে চলে আসেন| ইউটিউব আমাদের ওয়েবসাইটে লোক এনে দেয়| ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপিগুলি প্রতি মাসে 46টি ভাষায় প্রায় 120,000 কম্প্যুটারে প্রচারিত হয়| ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপিগুলি গ্রন্থসত্ত্ব দ্বারা সংরক্ষিত নয়, কাজেই প্রচারকগণ আমাদের অনুমতি ছাড়াই এইগুলি ব্যবহার করতে পারেন| মুসলিম এবং হিন্দু রাষ্ট্রসমেত, সমগ্র পৃথিবীতে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার এই মহান কাজে সাহায্য করার জন্য কিভাবে আপনি একটি মাসিক অনুদান প্রদান করতে পারেন তা জানতে অনুগ্রহ করে এখানে ক্লিক করুন|
যখনই আপনি ডঃ হেইমার্সকে লিখবেন সর্বদা তাকে জানাবেন যে আপনি কোন দেশে বাস করেন, অথবা তিনি আপনাকে উত্তর দিতে পারবেন না| ডঃ হেইমার্সের ই-মেল ঠিকানা হল rlhymersjr@sbcglobal.net |
মার্টিন লুথার এবং সেই শয়তান MARTIN LUTHER AND THE DEVIL লেখকঃ ডাঃ আর এল হাইমার্স, জুনি. ২৮-শে অক্টোবর,২০১২ সালে সান্ধ্যকালীন মুহুর্তে আমূল পরিবর্তনকারী রবিবার দিনে “তোমরা প্রবুদ্ধ হও, জাগিয়া থাক! তোমাদের বিপক্ষে শয়তান, গর্জ্জনকারী সিংহের ন্যায়, কাহাকে গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে”।(১-ম পিটার ৫ঃ৮) [লুথারের জীবনের যে রেখাচিত্র ব্যাপটিস্টের সব থেকে মহান প্রচারক সি এইচ স্পারজিওন যা লিখেছেন সেই বিষয়ে এই সংবাদের শেষে যা লেখা হয়েছে তা অনুগ্রহ করে খুলবেন] |
এই পাঠ্যাংশের বিষয়ে মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) যা বলেছেন, ‘মন্দ আত্মা ঘুমিয়ে থাকে না, সে হল চতুর এবং মন্দতায় পূর্ণ। সে ঠিক ক্ষুধার্ত সিংহের ন্যায় গর্জন করে কখন কাকে গ্রাস করবে তার অন্বেষণ করে চলেছে’। (Martin Luther, Th.D., পিটার ও জুডাসের ব্যাখামূলক বই, Kregel Classics, ১৯৯০ রি-প্রিন্ট, পৃ ২১৮; ১-ম পীটারের ৫ঃ৮ এর মন্তব্য) ডাঃ আর সি এইচ লেনস্কি বলেছেন,‘নিরোর নেতৃত্বে, ঠিক এই সময়ে অসহায় খ্রীষ্টিয়ানদের উপরে ছলনা পূর্ব্বক যে ভাবে আক্রান্ত হতে হয়েছিল তা ছিল ন্যাক্কারজনক তাড়নার এক গর্জন। ৬৪ [খৃষ্টাব্দে] অক্টোবর মাসে সেই ঝড়ের উদয় হয়। পিটার নিজেও শহিদ হয়ে যান। (এই ভাবে) শয়তান সর্ব্বদাই গর্জন করে যা সেই দিনে যে ভাবে করেছিল...’। (R. C. H. Lenski, Th.D., সাধু পীতার, সাধু যোহান এবং সাধু জুডাসের প্রতি পত্র; Augsburg Publishing House, ১৯৬৬, পৃ ২২৫) । শয়তান প্রথম তিনটি শতাব্দীতে প্রচন্ডভাবে গর্জন করেছিল যেখানে প্রাচীন রোমের আসন বেষ্টিত গোলাকার প্রাঙ্গনে হিংস্র সিংহের দ্বারা হাজার হাজার খ্রীষ্টিয়ানকে ছিঁড়ে টুকরো করে ফেলা হয়েছিল। পীটার তখন সন্দেহাতীত ভাবেই এই বিষয়ে চিন্তা করছিলেন যার বিষয়ে তিনি এই কথা বললেন, “তোমরা প্রবুদ্ধ হও, জাগিয়া থাক! তোমাদের বিপক্ষে শয়তান, গর্জ্জনকারী সিংহের ন্যায়, কাহাকে গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে”।(১-ম পিটার ৫ঃ৮) শয়তান যেমন ভাবে ঠিক তদন্ত করার ন্যায় লুথারের সময়ে, হলোকাস্টের সময়ে এবং চীন প্রদেশে সংস্কৃতি মূলক সংস্কারের সময়ে শয়তান গর্জন করেছিল ঠিক যেমন ভাবে আজকের রাত্রেও বহু জায়গাতে মুসলমান চরমপন্থীদের মধ্যে সে গর্জন করে চলেছে। কিন্তু শয়তান এখানে এই পশ্চিম দেশে ‘গর্জন’ করছে না। এখানে সে অতি চতুরতার সংগে মানুষকে ‘গ্রাস’ করার জন্য মনের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করছে। এখানে সে আমাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখার জন্য দেহত্ববাদকে বা জড়বাদকে ব্যাবহার করছে (অতি প্রাকৃতবাদকে অস্বীকার) আর এর মধ্য দিয়ে তাঁর উপস্থিতিকে অববাহিত করে রাখছে। কিন্তু শয়তান আমেরিকা এবং পশ্চিমী দেশে অত্যন্ত গুপ্তভাবে পারদর্শিতার সংগে কাজ করে চলেছে। যদিও এখানে সে অদৃশ্য পন্থায় কাজ করে চলেছে কিন্তু তার যে লস্ক্য তা কিন্তু বরাবরই এক, ‘অন্বেষণ করে চলেছে যে কহন কাকে সে গারস করতে পারে’। খ্রীষ্ট শয়তানকে বলেছেন, ‘সে আদি হইতেই নরঘাতক’ (যোহান ৮ঃ৪৪)। শইয়তানের আরো এক নাম হল ‘আবাদ্দন’(প্রকাশিত বাক্য ৯ঃ১১), যার অর্থ হল ‘বিনাশক’। উন্মুক্ত বা গুপ্ত ভাবে যাই হোক না কেন শয়াতানের উদ্দেশ্য হল ‘গ্রাস করা’, ‘হত্যা করা’ এবং মানুষের আত্মাকে ‘ধ্বংস বা নাশ করা’। আমেরিকার মধ্যে বহু ব্যাপটিস্ট পালক খুব অল্প সময়েই ‘শয়তান’ বা ‘ডেভিল’ সংম্বন্ধে সম্পূর্ণ সংবাদ প্রচার করেন কি না সন্দেহ আর এই দিক দিয়ে ডেভিল গুপ্তভাবে তার কাজের মধ্যে অত্যন্ত ভাবেই কৃতকার্য্য। বেশ কিছু প্রচারক রয়েছেন, তারা এতটাই অন্ধ বলে মনে হয় যে শয়তানের কার্য্যকলাপের প্রতি তা এমন কি তাদের মন্ডলীতেও পর্যন্ত সে কৃতকার্য্য হয়ে ওঠে। আমেরিকা বাসীরা আত্মিক ভাবে কতোটাই না নির্বোধ হয়ে রয়েছে। আমরা অনুমোদন জানিয়েছি আমাদের পাবলিক স্কুলে ধন্যবাদ দিবস, খ্রীষ্টমাস বা বড়দিন এবং পুণরত্থান দিবস পালন করাটাকে বন্ধ করে দিয়েছি। এমন কি এর পরিবর্তে তারা তাদের প্রতিটি শ্রেণী কক্ষকে মন্দয়াত্মা ও মরা মাথার খুলি ও ডাকিনী যোগিনী এবং রক্ত চোষা ছায়া সৃষ্টি দিয়ে অঙ্কন করে রেখেছি; যেখানে তাদের দাঁত ও মুখের কষ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসছে, যেখানে ছেলে মেয়েরা সেই স্মৃতির প্রতি একদৃষ্টে চেয়ে থাকে। এই বিষয়ে বাইবেল বলে, ‘আপনাদিগকে বিজ্ঞ বলিয়া তাহার মূর্খ হইয়াছে’। (রোমানস ১ঃ২২) এবং এই বিষয়ে শেকসপিয়ের বলেছেন, ‘এই অবিনশ্বর কতোটাই না মূর্খ হয়েছে’। এটাই আমাদের মার্টিন লুথারের প্রতি ফিরিয়ে নিয়ে যায়। তাকে প্রায় সময়ে বিংশতিতম শতাব্দীর স্বাধীন চিন্তায় প্রভাবিত ‘পন্ডিতদের’ দ্বারা অভিযুক্ত হতে হয়েছিল এইজন্য কেন না তিনি শয়তান এবং মন্দ আত্মাদের বিষয়ে বেশি করে জোর দিয়েছিলেন। এমন কি রক্ষণশীল আধুনিক লুথারের মতো ব্যাক্তি ইউয়াল্ড এম. প্লাস শয়তানের উপরে লুথার যে গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন তার কিছুটা সমালোচনা করেন। প্লাস বলেন, ‘বর্তমানের থেকে লুথার স্বভাবত বহু অন্ধবিশ্বাস নিয়ে কথা বলেন। এখানে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই যে স্বাভাবিক কারণে যেটা উপযুক্ত ছিল সেই বিষয়ে তিনি প্রায় ক্ষেত্রে অন্ধকারের শক্তি সম্পর্কে যে সকল কার্য্য তার বিষয়েই বর্ণনা করেন’। কিন্তু এর পরেও প্লাস এই কথা বলে নিজেকে সুরক্ষিত করেন যে ‘সম্ভবত সেই শয়তান স্বাভাবিকের থেকেও আরো লক্ষণীয় ভাবে সক্রিয় (লুথারের সময়ে) ছিল কেন না তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে এর ঝুঁকি কতোটা’। (Ewald M. Plass, What Luther Says, Concordia Publishing House, 1994 edition, pp. 391-392). ডেভিড এল. লারসেন পর্যন্ত এই কথা বলার দ্বারা শয়তান ও ডেভিলের গুরুত্বের বিষয়টাকে খাটো করে দেখেন’, লুথার প্রকৃত ভাবেই মধ্যযুগীয় ছিলেন.... কেননা শেষ বিচার তড়ি ঘড়ি এসে উপস্থিত হলে ঈশ্বর ও শয়তানের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব সেই বিষয়ে লুথার দেখলেন যে সমস্ত মনুষ্য জাতি অগাধলোকে বদ্ধ’। (David L. Larsen, M.Div., D.D., The Company of the Preachers, Kregel Publications, 1998, p. 153). ডাঃ লারসেন হলেন এক আমেরিকান প্রচারক যিনি পশ্চিমী দেশের বস্তুবাদের দ্বারা প্রাভাবিত হোন। কিন্তু একজন প্রচারক যারা আফ্রিকা, চীন বা ভারতের, তারা লুথারের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভাবে একমত পোষণ করেন। এতা তৃতীয় বিশ্বের প্রচারকদের ‘মধ্যযুগীয়’ করে তোলে না। ইহা কেবল সেটাই দেখায় যে সেগুলো যুক্তিবাদী বস্তুবাদের থেকে তারা কেবল বাইবেল ভিত্তিক, ঠিক তাদের মতোই যারা ফুলার সেমিনারী এবং উদারমাওনা প্রতিষ্ঠানের ধর্মতত্ত্ববিদগণের ন্যায়। উদারমনা ফুলার থিওলজিকাল সেমিনারী – এক নতুন সুসমাচার প্রচার মূলক স্কুলে যেখানে লারসেন তার মাস্টার ডিগ্রী অর্জন করেন সেখানে এই বিষয়ের উপরে লুথারের ভুল খঁজে বের করার চেষ্টা করেন। আমি দেখেছি যে ফুলারে যে সমস্ত ছাত্ররা রয়েছে তারা অতীতে আমাদের বিশ্বাসের এ দৈত্যরা রয়েছে তাদের বিষয়ে সমালোচক হয়ে উঠতে শিখেছে। আর সেই ভাবেই আমি শিক্ষা লাভ করেছি সেই দুই উদারমনা থিওলজিকাল সেমিনারীতে যেখান থেকে আমি স্নাতক হয়েছি। কিন্তু সেই যে প্রভাব সেটাকে আমি দমন করেছি কিন্তু লারসেন তা করেন নি! লারসেন বলেছেন, ‘লুথার সত্য সত্যই একজন মধ্যযুগীয় ছিলেন...। লুথার দেখেছিলেন ‘শেষ বিচার তড়িঘড়ি এসে উপস্থিত হলে, তখন শয়তান এবং ঈশ্বরের মধ্যে দ্বন্দ্ব সেই বিষয়টাকে নিয়ে সমস্ত মনুষ্যজাতি অগাধলোকে বদ্ধ রয়েছে’। এই বিষয়ে ভুলটা কোথায় ছিল ? কেন সেই বিষয়টা তাকে মধ্যযুগীয় করে তোলে? বৃদ্ধ বয়সের মধ্যে ইহুদীদের বিষয়ে এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে লুথার বেশ কিছু মধ্য যুগীয় বিষয় বলেন যা অত্যন্ত ভাবেই প্রত্যাখান করা হয়। কিন্তু এই বিষয়ে চিন্তা করার জন্য লুথার ভুল ছিলেন না যেখানে তিনি বলেছেন মনুষ্য জাতি ‘ঈশ্বর ও ডেভিলের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব তার অতলে বদ্ধ’। এই বিষইয়ে তিনি যথার্থভাবেই সঠিক ছিলেন – কেননা বাইবেল সেটাই শিক্ষা দেয়! “তোমরা প্রবুদ্ধ হও, জাগিয়া থাক! তোমাদের বিপক্ষে শয়তান, গর্জ্জনকারী সিংহের ন্যায়, কাহাকে গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে”।(১-ম পিটার ৫ঃ৮) শয়তান ও মন্দ আত্মা সম্বন্ধে যার বিষয়ে লুথার বলেছেন তার বেশীর ভাগ বাইবেলের দিক দিয়ে যথার্থ। ১. প্রথমত, তিনি যখন শয়তান ও মন্দ আত্মাদের অস্তিত্ব সম্বন্ধে বলেন সেই সূত্রে লুথার সঠিক ছিলেন লুথার বলেছেন, [শয়তান কোথা থেকে এসেছে?] এগুলো হল নিশ্চিত এক ঘটনাঃ জ্যোতিস্বরুপ এক দূত থেকেই দূতেদের পতন হয় আর শয়তান তখনই অন্ধকারের এক দূত বলেওখ্যাত হয়ে ওঠে.. লুথার যে ঠিক কথাই বলেছিলেন সেই বিষয়ে বাইবেল তা যথার্থ বলে মনে করে ; “হে প্রভাতী তারা! উষানন্দন! তুমি তো স্বর্গ ভ্রষ্ট হইয়াছ! যে জাতিগণের নিপাতকারী, তুমি ছিন্ন ও ভূপতিত হইয়াছ! তুমি মনে মনে বলিয়াছিলে, ‘আমি স্বর্গারোহণ করিব, ঈশ্বরের নক্ষত্রগণের উর্দ্ধে আমার সিঙ্ঘাসন উন্নিত করিব; সমাগম পর্বতে, উত্তর দিকের প্রান্তে উপবিষ্ট হইব; আমি মেঘ রুপ উচ্চস্থলীর উপরে উঠিব, আমি পারাৎপারের তুল্য হইব। তথাপি তোমাকে নামানো যাইবে পাতালে, গর্তের গভীরতম তলে’ (ঈশা ১৪ঃ১২-১৫) লুথার বলেন, সেখানে ভালো ও মন্দ স্বর্গ দূত রয়েছে (কিন্তু) ঈশ্বর তাদের সকলকেই উত্তম রুপে সৃষ্টি করেছেন। প্রয়োজনীয়তা সেখানেই অনুসরণ করে কেননা মন্দ দূতেরা পতিত হল আর তারা সত্যের মধ্যে দৃঢতার সঙ্গে দাঁড়াতে অপারগ হয়ে উঠলো...এটা অত্যন্ত ভাবেই সম্ভব কেননা তাদের গর্বের জন্যই তারা পতিত হল, কেননা তারা অবজ্ঞা করেছিল.... সেই ঈশ্বরের পুত্রে আর তার উপরে তারা নিজেদের উন্নত করতে চেয়েছিল (প্লাস, ইবিড পৃ. ৩৯১) বাইবেলে যে লুথার এই দিক দিয়ে ঠিক ছিলেন। ইজিকিয়েল ২৮ঃ১৩-১৭ আমাদের যা বলে তা লুথার এবং বাইবেল যা বলে তা এইরুপ, “তুমি (শয়তান) ঈশ্বরের উদ্যান ইডেনে ছিলে; সর্বপ্রকার বহুমূল্য প্রস্তর, চূণি, পীতমণি, হীরক, বৈদুর্য্যমণি, গোমেদ, সূর্যকান্ত, নীলকান্ত, হরিন্মণি ও মকরত এবং স্বর্ণ তোমার আচ্ছাদন ছিল, তোমার ঢাকের ও বাঁশের কারুকার্্য্য তোমার মধ্যে ছিল; তোমার সৃষ্টিদিনে এ সকল প্রস্তুত হইইয়াছিল। তুমি অভিষীক্ত আচ্ছাদক ছিলে, আমি তোমাকে স্থাপনা করিয়া ছিলাম, তুমি ঈশ্বরের পবিত্র পর্বতে ছিলে; তুমি অগ্নিময় প্রস্তর সকলের মধ্যে গমনাগমন করিতে। তোমার সৃষ্টিদিন অবধি তুমি আপন আচারে সিদ্ধ ছিলে; তোমার মধ্যে অন্যায় পাওয়া গেল। তোমার বাণিজ্যবাহুল্যে তোমার অভ্যন্তরের দৌরাত্মে পরিপূর্ণ হইল, তুমি পাপ করিলে, তাই আমি তোমাকে অগ্নিময় প্রস্তর সকলের মধ্য হইতে লুপ্ত করিলাম। তোমার চিত্ত তোমার সৌন্দর্য্যে গর্বিত হইয়াছিল; তুমি নিজ দীপ্তিহেতু আপন জ্ঞান নষ্ট করিয়াছ; আমি তোমাকে ভূমিতে নিক্ষেপ করিলাম, রাজাগণের সম্মুখে রাখিলাম, যেন তাহারা তোমাকে পথ দেখাতে পায়’। (ইজিকিয়েল ২৮ঃ১৩-১৭) যারা মন্দ আত্মায় পরিণত হয়েছিল পতিত সেই স্বর্গদূতেদের বিষয়ে প্রেরিত জুডাস বলেন, “আর যে স্বর্গ দূতেরা আপনাদের আধিপত্য রক্ষা না করিয়া নিজ বাসস্থান ত্যাগ করিয়াছিল, তাহাদিগকে তিনি মহাদিনের বিচারার্থে ঘোর অন্ধকারের অধীনে অনন্তকালীন শৃঙ্খলে বদ্ধ রাখিয়াছেন’ (জুডাস ৬) পতিত এই সমস্ত স্বর্গ দূতেদের অনেকে নরকের শৃঙ্খলে বদ্ধ হয়ে রয়েছে। কিন্তু আজকে বর্তমান জগতে যাদের আমরা সম্মুখীন হই তাদের প্রায় সংখ্যকই মন্দ আত্মা। লুথার বলেছেন, ‘যদিও এই জগৎ শয়তানে পরিপূর্ণ’। ‘ডেভিল’ হল ‘মন্দ আত্মাদের’ পুরাতন শব্দ। ইহা গান, আর এই জগৎ যদিও শয়তানে পূর্ণ ২. দ্বিতীয়ত, তিনি যখন বলেন, শয়তান হল দুঃখ ও অবসাদের রচয়িতা, সেকথা লুথার ঠিকই বলেছেন। লুথার বলেছেন, সমস্ত প্রকার দুঃখ আসে শয়তান থেকে কেন না সে হল সমস্ত মৃত্যুর প্রভু। অতএব, ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের মধ্যে আমাদের যে দুঃখ নেমে আসে তা নিশ্চিত ভাবেই শয়াতানের কার্য্য। লুথার বলেছেন, “[সেই শয়তান] হৃদয়ের মধ্যে অত্যন্ত জঘন্য মঞ্জরী উৎপাদনকারী শাখা, ঈশ্বরের ঘৃণ্য, অপবাদক এবং নিরাশক। এই গুলো হল ‘জ্বলন্ত ময়লা’ বা ‘অগ্নিবাণ’ ইফেসিয়ানস ৬:১৬” (প্লাস, ইবিড, পৃ ৩৯৯)। এই গুলো হল প্রকৃত সত্য বিষয় যা বর্তমান দিনে সেই সমস্ত লোকেদের প্রতি ঘটছে যাদের আমরা ব্যক্তিগত ভাবে ভালো ভাবে জানি। অনুসন্ধান কক্ষে আমাদের একজন ডিকন একজন যুবক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন। সেই যুবক ব্যাক্তি বলেন, ‘ ঈশ্বর আমাকে ভালবাসেন না। যীশুও আমাকে ভালোবাসেন না’। লুথার যেমন ভাবে বলেছেন, ‘এই গুলো হল এত স্বচ্ছ ও পরিষ্কার চিন্তাধারা যা শয়তানের কাছ থেকে আসে, যা হল ‘অপবাদ দেওয়া এবং নিরাশা গ্রস্থ করা’। এরপরে ডিকন তার কাছে বাইবেল থেকে পড়লেন, “কারণ ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাত পুত্রকে দান করিলেন, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিলুপ্ত না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়’ (জন ৩ঃ১৬) ডিকন যখন তাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে সে সেই পদটাতে বিশ্বাস করে কি’না, তখন সে সেই উত্তর দেওয়াটা প্রত্যাখান করে। আমি বিশ্বাস করি যে শয়তান উত্তর দেওয়া থেকে তাকে বিরত রেখেছে। বাইবেল শোনা থেকে শয়তান আমাদের দূরে রাখতে চায় এবং যিখিন আমরা ইহা শুনি তখন তা গ্রহণ করা থেকেও আমাদের বিরত রাখতে চায়। লুথাত বলেছেন, ‘ঈশ্বরের বাক্য থেকে আমাদের দূরে রাখাও আমাদের খন্ড করে ফেলার জন্য শয়তান সমস্ত প্রকার ফন্দীর অনুশীলন করে’। (প্লাস, ইবিড পৃ. ৩৯৬) একজন যুবতী মহিলা সেই একই ডিকনকে এই কথা বলে, ‘আমাকে ক্ষমা করা হয় নি, আর আমি জানি না কেন ক্ষমা করা হয় নি’। তিনি হয়তো জানেন না কিন্তু আমি তা জানি। তিনি ক্ষমা লাভ করেন নি কেন না বাইবেলের প্রতিজ্ঞা সকল বিশ্বাস করার পরিবর্তে শয়তান তার মনের মধ্যে যে সন্দেহ ভরিয়ে তুলেছে তার মধ্যেই সে ক্রমাগত ভাবে বিশ্বাস করেছে। ‘যে কেহ আমার কাছে আসে তাকে আমি কোন মতে বাইরে ফেলে দেব না’ (যোহান ৬ঃ৩৭)। খ্রীষ্টের এই যে বাক্য তা তিনি প্রত্যাখান করেন। লুথার বলেছেন যে শয়তান ‘ এমন জঘন্য চিন্তাধারা হৃদয়ের মধ্যে ছুঁড়ে দেয় যা হল (নিরাশ হয়ে ওঠার ) চিন্তাধারা’। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ঈশ্বরের বাক্য থেকে দূরে নিয়ে গিয়ে আমাদের ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করার জন্য শয়তানের সমস্ত অপবাদ আমাদের উপরে অনুশীলন করা হয়’। এই একই প্রকার বিষয় যীশু বলেছেন, ‘পরে ডেভিল (শয়তান) আসিয়া তাহাদের হৃদয় মধ্যে সেই বাক্য হরণ করিয়া লয়, যেন তাহারা বিশ্বাস করিয়া পরিত্রাণ না পায়’। ( লিউক ৮ঃ১২) ৩. তৃতীয়ত, তিনি যখন দুঃখ ও নিরাশাকে দেখেন তা যে ঠিক পাপের দণ্ড প্রদান করার মতো নয়, এই কথা বলাতে লুথার যথার্থ ছিলেন লুথার বলেন যে দুঃখ এবং নিরাশা ডেভিলের কাছ থেকে আসে। কিন্তু তিনি এই বিষয়ে শিক্ষা দেন যে পাপের যে দন্ড বিধান তা ঈশ্বর থেকে। বাইবেলো ঠিক সেই একই প্রকার প্রভেদ তৈরী করে। “কারণ ঈশ্বরের মতানুযায়ী যে মনোদুঃখ, তাহা পরিত্রাণ জনক এমন মন পরিবর্তন উৎপন্ন করে, যাহা অনুশোচনীয় নয়; কিন্তু জগতের মনোদুঃখ মৃত্যু সাধন করে”(২-য় করিন্থিয়ান্স ৭ঃ১০) মন পরিবর্তন থেকে পাপের বিষয়ে যে দন্ড বিধান সেই বিষয়ে লুথার বলেছেন, আপনি যদি মন পরিবর্তন বা কনভার্ট হতে চান তবে ইহা অত্যন্ত জরুরী যেন আপনি সন্ত্রস্ত হোন আর তা হল আপনার মধ্যে সজাগ হয়ে যাওয়ার এক সচেতনতা বোধ আছে। এই অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার পরে আপনাকে অতি অবশ্যই সেই স্বান্তনা আয়ত্ত্ব করতে হবে যেটা আপনাকে নিজের কোন কাজ থেকে আসে না কিন্তু তা আসে ঈশ্বরের কাজ থেকে। তিনি তাঁর পুত্র যীশুখ্রীষ্টকে এই জগতে প্রেরণ করেন যেন সন্ত্রস্ত পাপীদের কাছে ঈশ্বরের দয়ার বিষয়ে ঘোষণা করেন। এতাই হল সেই পন্থা যার দ্বারা মন পরিবর্তনের বিষয়টা সামনে আসে; এ ছাড়া অন্য যে পন্থা রয়েছে তা হল ভ্রান্ত বা ভুল পন্থা। (প্লাস, ইবিড পৃ.৩৪৩) লুথার বলেছেন, ধার্মিক গণিত হওয়ার অর্থ হল আমরা পাপ, মৃত্যু ও শয়তানের হাত থেকে উদ্ধাএ লাভ করেছি এবং অনন্ত জীবনের অংশী হয়েছি, ইহা আমাদের দ্বারা নয়, আমাদের কোন সাহায্যের দ্বারা নয় কিন্তু একমাত্র ঈশ্বরের পুত্র যীশুখ্রীষ্টের দ্বারা (প্লাস, ইবিড পৃ. ৩৪৩) লুথার বলেছেন, কেবল মাত্র যীশু খ্রীষ্টের কথা শোনা এবং তাঁর উপরে বিশ্বাস করা ছাড়া ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়ার প্রতি বেশী আর অন্য কিছুর প্রয়োজন হয় না... (প্লাস, ইবিড পৃ. ৭০৭) মহান সংস্কার সাধনকারী লুথারের সংগে বাইবেল ভিত্তিক প্রোটেসট্যান্ট এবং ক্লাসিকাল ব্যাপটিস্টরা ইহাতে সহমত পোষণ করেন। প্রেরিত পল নিজে বলেছেন, ‘প্রভু যীশুতে বিশ্বাস কর তাহাতে পরিত্রাণ পাইবে’ (প্রেরিত ১৬ঃ৩১)। এর থেকে বেশী কিছুর প্রয়োজন নেই। আমরা কেবল মাত্র খ্রীষ্টে বিশ্বাস করার দ্বারাই উদ্ধার লাভ করেছি। আপনার গানের যে পাতা রয়েছে সেখানে অনুগ্রহ করে চতুর্থ সংখ্যার গানের প্রতি তাকান। ইহা গান, আমাদের ঈশ্বর হলেন দৃঢ দূর্গ, চরিতার্থ ত্রাতা লুথারের জীবনের উপরে স্পারজনের অংকন “ধার্মিক ব্যাক্তি, বিশ্বাস হেতুই বাঁচিবে” (রোমানস ১ঃ১৭) সমস্ত সময়ের জন্য স্পারজান হলেন ব্যাপটিস্টের এক মহান প্রচারক, লুথারের বিষয়ে এই কথা গুলো বলেন; লুথারের জীবনের বেশ কিছু ঘটনা উল্লেখ করার দ্বারা এই শিক্ষার সারমর্ম এবং উদাহরণ এইভাবে লিখবো। যতদূর পর্যন্ত মহান সংস্কার সাধনকারীর সুসমাচারের আলোকেও এর পর্যায় ক্রম। ইহা তার সেই আশ্রমের মঠেই সেই পুরাতন বাইবেলটির পাতা উলটেই যা তাকে ঠিক এক থামের মধ্যে শৃঙ্খলে বদ্ধ করে রেখেছিল, সেখানেই তিনি একটি অনুচ্ছেদের মধ্যে পড়তে থাকেন—‘ধার্মিক ব্যাক্তি বিশ্বাস হেতু বাঁচিবে’। ঐশ্বরীয় এই অনুচ্ছেদটি তাকে যেন মর্মাহত করে তুললো। কিন্তু তিনি এর স্পষ্টতা সম্বন্ধে খুব সামান্যই অনুভব করলেন। যাই হোক নাকেন তিনি তার ধর্মীয় উদ্যোগে এবং মঠের নিত্য আচরণের দ্বারা শান্তি লাভ করতে পারেন নি। এই বিষয়ে ভাল ভাবে না জেনেই, তিনি বহুবার অনুশোচনার মধ্যেই নিযে থেকে অধ্যাবসায়ী হয়ে ওঠেন ও নিজেকে কষ্টের মধ্যে আঘাত দিতে থাকেন এর মধ্য দিয়ে যাওয়ার ফলে ক্লান্ত হয়ে গিয়ে দূর্বল হয়ে ওঠেন। তিনি নিজেকে মৃত্যু পথের যাত্রী করে তোলেন।তাকে অবশ্যই রোম যাত্রা করতে হবে কেন না রোমে প্রতি দিন একটি করে মন্ডলীর সভা হতো আর সেই পবিত্র পীঠ স্থানে আপনার সমস্ত পাপের ক্ষমালাভের আশীর্বাদ আপনি সেই জায়গায় লাভ করতে পারেন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন যে (রোম) হল এমন একটি পবিত্র নগরী যেখানে তিনি প্রবেশ করছেন কিন্তু পরিশেষে তিনি দেখলেন যে ইহা যেন পাপ কর্মের গহবর এবং কপটীর আস্তানা। তার সেই বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতায় তিনি এই কথা ভাবলেন, যে যদি সেখানে কোন নরক থাকতে হয়, তবে রোমকেই ইহার প্রথমে ইহার উপরে গাঁথতে হবে; কেননা তার সব থেকে কাছে আসার জন্য এটাই হল সবথেকে কাছের জায়গা যেতাকে এই বিশ্বে পাওয়া যেতে পারে; কিন্তু এই সত্ত্বেও তিনি পোপের প্রতি বিশ্বাস করতেন এবং অনুশোচনার মধ্য দিয়েই তিনি তা অর্জ্জন করার চেষ্টা করেছিলেন, বিশ্রামের অন্বেষণ করেছিলেন কিন্তু তিনি কিছুই পান নি... (পরবর্তী সময়ে) প্রভু তাকে সম্পূর্ণ ভাবে মুক্তি প্রদান করলেন সেই সমস্ত অন্ধ বিশ্বাস থেকে আর তিনি দেখলেন যে পুরোহিতগণের দ্বারা নয় আর না তো কোন ধর্মযাজক আর না তো কোন আরোপিত প্রায়শ্চিত্ত বিধির দ্বারা অথবা অন্য যা কিছু সে করতে পারে তার দ্বারা নয় কিন্তু তাকে ধার্মিক গণিত হওয়ার জন্য তাকে অবশ্যই তার নিজের বিশ্বাসের দ্বারা জীবন যাপন করতে হবে (খ্রীষ্ট বিশ্বাসের দ্বারাই)। আজকের (সকালে) আমাদের যে পাঠাংশ তা সেই (ক্যাথলিক) সন্ন্যাসীর স্বাধীনতাকেকেন্দ্র করেই আর সেটাই তার আত্মাকে পিপাসু করে তুলেছিল। পরিশেষে লুথার যখন তার পাঠ্যপুস্তককে বুঝতে পারলেন তিনি কেবল মাত্র খ্রীষ্টেই আস্থা স্থাপন করলেন। তিনি তার মা’কে লিখলেন, আমি নিজে নতুন ভাবে জন্মাবার অনুভুতি এবং পরম দেশে গমনাগমন করার অনুভুতি লাভ করেছি। স্পারজান বলেছেন, ইহা বিশ্বাস করার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি প্রাণবন্ত ভাবে ইহার মধ্যে জীবন যাপন করতে শুরু করেন। টেটযেল (যাজক) নামে একজন, যিনি জার্মানের সমস্ত জায়গাতে গিয়ে হাতের মধ্যে চটজলদি প্রচুর অর্থ নিয়ে পাপের ক্ষমা বিক্রি করছিলেন। আপনার অপরাধ কি ও তা কত বড় সেটা বিষয় নয়, যখনি আপনার অর্থ সংগৃহীত বাক্সের তলদেশ স্পর্শ করে তখনই আপনার সমস্ত পাপের অবসান হবে। লুথার এই বিষয়ে শোনার পরেই ঘৃণায় ফেটে পড়েন এবং চেঁচিয়ে ঊঠে বলেন, ‘আমি তার সেই বাক্সের / ড্রামে ফুটো করে দেব’, আর নিশ্চিত ভাবেই তিনি তা করেও ছিলেন, শুধু সেটাকেই নয় কিন্তু আরো বেশ কিছু বাক্স/ড্রামকে তিনি ফুটো করে দিয়েছিলেন। সেই সময়ে অসংযমতার যে সুর তাকে নিশ্চিত ভাবে নিস্তব্ধ করার পন্থা হিসেবে তিনি এই বিষয়টাকে মন্ডলীর দরজাতে পেরেক বিদ্ধ করে টাঙিয়ে দিলেন। বিনা অর্থে ও বিনা মূল্যে খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে পাপের ক্ষমা লাভ করা যায় সেই দিন তিনি তা ঘোষণা করেন আর পোপের আচরণ তখন অতি শীঘ্রই অবজ্ঞায় পরিণত হয়ে যান। লুথার তার বিশ্বাস অনুযায়ী জীবন যাপন করেন আর অতএব তিনি যিনি হয়তো নীরব থাকতে পারতেন তিনি তা না করে সিংহ যেমন ভাবে তার শিকারের উপরে গর্জ্জন করতে থাকে তিনিও ভুলগুলোকে তেমনি ভাবে প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। সেই বিশ্বাস যা তার মধ্যে ছিল তা তাকে নিবিড়তার জীবনে পরপূর্ণ করে তুললো, আর তিনি যেন শত্রুর সঙ্গে সজোরে নিক্ষিপ্ত হয়ে পড়লেন। এর কিছুদিন পরে তারা তাকে অক্সবার্গে ডেকে পাঠান, আর যদিও তার বন্ধুরা তাকে না যাওয়ার পরামর্শ দিলেও, অক্সবার্গে তিনি উপস্থিত হোন। সেখানে তাকে তারা ধর্মদ্বেষি বলে সমন জারি করেন এবং (সম্রাটের পরামর্শ সভাতে) মন্ডলীর আলোচনার জন্য নিজের পক্ষে উত্তর প্রদান করতে বলা হয় বিশ্বাস অর্জন করার জন্য। আর প্রত্যেককে বলা হয়েছিল তার থেকে দূরে থাকতে, কেননা নিশ্চিত ভাবেই তাকে মরা খুঁটিতে বেঁধে জ্বালানো হবে; কিন্তু তিনি অনুভব করলেন যে এই সময়ে যেন এক সাক্ষ্যের উদ্ভব হয় আর আর তাই তিনি ঘোড়ার গাড়িতে করে গ্রামে গ্রামে ও শহরে শহরে ঘুরলেন, যেখানেই তিনি গেলেন সেখানে প্রচার করতে আরম্ভ করলেন, সেই সমস্ত হতভাগ্য লোকেরা বাইরে বেরিয়ে এসে সেই ব্যাক্তির সঙ্গে করমর্দন করলেন যিনি খ্রীষ্টের জন্য দাঁড়িয়েছেনার তখন সুসমাচার যেন জীবনের একটা ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আপনি কি স্মরণ করতে পারছেন সেই সম্রাটের পরামর্শ সভাতে বিশ্বাস অর্জনের জন্য কিভাবে নিজেকে দাঁড় করিয়ে ছিলেন, আর তিনি জানতেন যতদূর পর্যন্ত মানুষের জ্ঞান বিচার করা যায়, সেই হিসেবে তার জীবন এক বিরোধিতার সম্মুখিন, তাকে হয়তো ঠিক জন হাসকে যেমন ভাবে করা হয়েছিল ঠিক সেই ভাবে মরণ খুঁটিতে বেঁধে তাকেও হয়তো পুড়িয়ে মারা হবে, তথাপি তিনি সেই প্রকার মনুষ্যের ন্যায় আচরণ কএরন যিনি তার জন্য ঈশ্বর ও প্রভু হয়েছেন। সেই দিন জার্মানদের মন্ডলী সভার প্রাঙ্গনে লুথার একটি কাজ করেন যার জন্য দশ গুণ দশ হাজার বার তাদের মায়েরা তাদের সন্তানদের জন্য আশির্বাদ কামনা করবেন এবং তার থেকে তারা বেশী করে তার প্রভু ঈশ্বরের নাম’কে আসজির্ব্বাদ যুক্ত করবে। (C. H. Spurgeon, “A Luther Sermon at the Tabernacle,” The Metropolitan Tabernacle Pulpit, Pilgrim Publications, 1973 reprint, Volume XXIX, pp. 622-623). “ধার্মিক ব্যাক্তি, বিশ্বাস হেতুই বাঁচিবে” (রোমানস ১ঃ১৭) ১৯৫০-সালের প্রথমেই, বহু বৎসর আগে লুথারের সঙ্গে সর্ব প্রথমে আমি মুখোমুখি হই একটি ব্যাপটিস্ট মন্ডলীর মধ্যে। সেই দিন রবিবার রাত্রিবেলা, তার সম্পর্কে সাদা ও কালও একটি চলচ্চিত্র সেখানে প্রদর্শন করে। তাকে দেখলে মনে হয়, যেন তিনি অতীতের কোন বিশেষ ব্যাক্তি তার প্রতি আমার যে আসক্তি সেই বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই। সেই চলচ্চিত্রটা ছিল দীর্ঘ এবং ক্লান্তিজনক আর আমি আশ্চর্য্য হয়ে যাচ্ছি কেনই বা আমার প্যাস্টার ডাঃ ওয়ালটার এ. পেগ ইহাকে উপস্থাপন করার জন্য চিন্তা করলেন না। আজকে আমাকে সেই বিষয়টা যোগ দিয়ে বলতে হবে আমি এই মহান চলচ্চিত্র থেকে সম্পুর্ণ আলাদা একটা দৃশ্য লাভ করেছিলাম। ইহাকে এখনও আমি দেখতে ভালোবাসি! এই চিত্র থেকে কিছু দৃশ্য দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।. লুথারের সঙ্গে আমার দ্বিতীয়বারের যে মুখোমুখি হওয়া তা হল, আমি যখন কনভার্ট হই তার পরে। আমি জন ওয়েলেসলি’র পরিবর্তিত হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা পড়েছিলাম, যেখানে ওয়েলেসলি বলেছেন, এলডার গেট স্ট্রীটে এক সন্ধ্যাকালে অনিচ্ছাকৃত ভাবেই আমি একটি সোসাইটিতে যাই, যাখানে একজন ব্যাক্তি রোমিয় পত্রের মধ্যে লুথারের ভূমিকা নিয়ে পড়ছিলেন। প্রায় ন’টা বাজার পনেরো মিনিট আগে খ্রীষ্টের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপনের মধ্যে ঈশ্বর তার মধ্যে যে পরিবর্তন এনেছিলেন সেই বিষয়ে যখন বর্ণণা করছিলেন তখন আমি অনুভব করলাম যে আমার হৃদয় যেন অদ্ভুত ভাবেই উত্তপ্ত বা উষ্ণ হয়ে উঠেছে। আমি তো খ্রীষ্টে নর্ভর করি, কেবল মাত্র খ্রীষ্টই আমার জীবনের ত্রাণ কর্তা এবং আমাকে এক নিশ্চয়তাও প্রদান করা হয়েছে যে তিনি আমার সমস্ত পাপ নিয়েছেন, তা এমনকি আমার নিজের পর্যন্ত এবং তিনি আমাকে পাপ ও মৃত্যুর হাত থেকে উদ্ধার করেছেন। (John Wesley, The Works of John Wesley, third edition, Baker Book House, 1979 reprint, volume I, p. 103). এটা আমার মধ্যে এক ছাপ বা অনুভুতি নিয়ে আএ কেন না আমি জানি প্রথমে যখন সেই মহা জাগরণের সময় আসে তখন ওয়েলেসলিও সেই পরাক্রমী প্রচারকের সঙ্গে এগিয়ে গিয়েছিলেন। ওয়েলেসলি যখন লুথারের সাক্ষ্য শোনেন, যে ধার্মিকতা কেবলমাত্র খ্রীষ্টের মধ্যে বিশ্বাস দ্বারা হয়, তখন তিনি কনভার্ট হোন। তথাপি,এর পরবর্ত্তী সময়েও আমি শিখলাম যে জন ব্যানিয়েন, আমাদেরই ব্যাপটিস্ট পূর্ব পিতামহ লুথারের বিষয়ে পড়েছিলেন যখন তিনি অবিশ্বাস্যনীয় ভাবে কনভার্ট হোন। তিনি তার লেখাকে ‘আরো বর্ধিষ্ণু করে তোলেন, লুথারের লিখিত শাস্ত্রাংশ পড়ে’। (Pilgrim's Progress, Thomas Nelson, 1999 reprint, publisher's introduction, p. xii). ব্যানিয়েন হলেন ব্যাপটিস্ট লেখক দের মধ্যে সর্ব্বকালের স্বীকৃত লেখক যার বই অনেকেই পড়েছে! জন ওয়েলেসলি, একজন ম্যাথডিস্ট, তিনি লুথারের বাক্য পড়েই কনভার্ট হোন। ব্যাপটিস্টের মধ্যে জন ব্যানিয়েন, তার দ্বন্দ্বের সময়গুলোতে লুথার যে সমস্ত বিষয় লিখেছেন তার দ্বারা বহু সাহায্য লাভ করেন। আমার মনে হয় সমস্ত কিছুর উপরে লুথারের লেখা বিষয় গুলো আদান প্রদান করলে খুবই ভালো হয়। বক্তৃতার সমাপ্তি You may email Dr. Hymers at rlhymersjr@sbcglobal.net, (Click Here) – or you may সংবাদের আগে শাস্ত্রের যে অংশ পাঠ করা হয়েছে, তা করেছেন ডাঃ |
খসড়া চিত্র মার্টিন লুথার এবং সেই শয়তান MARTIN LUTHER AND THE DEVIL লেখকঃ ডাঃ আর এল হাইমার্স, জুনি. “তোমরা প্রবুদ্ধ হও, জাগিয়া থাক! তোমাদের বিপক্ষে শয়তান, গর্জ্জনকারী সিংহের ন্যায়, কাহাকে গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে”।(১-ম পিটার ৫ঃ৮) (সাধু যোহান ৮ঃ৪৪; প্রকাশিতবাক্য ৯ঃ১১; রোমানস ১ঃ২২) ১. প্রথমত, তিনি যখন শয়তান ও মন্দ আত্মাদের অস্তিত্ব সম্বন্ধে বলেন ২. দ্বিতীয়ত, তিনি যখন বলেন, শয়তান হল দুঃখ ও অবসাদের ৩. তৃতীয়ত, তিনি যখন দুঃখ ও নিরাশাকে দেখেন তা যে ঠিক |